প্রকাশিত: Mon, Aug 14, 2023 11:03 PM
আপডেট: Mon, Jun 30, 2025 4:30 AM

[১]বিশ^নেতাদের চোখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক আপোসহীন ও মানবতাবাদী নেতা, মহান স্বপ্নদ্রষ্টা রাষ্ট্রনায়ক

সালেহ্ বিপ্লব: [২]  আজ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। স্বাধীনতার স্থপতি ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী।

[৩] বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর সামরিক সরকার ৩২ নম্বরের বাড়িটিতে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়নি। ১৯৮১ সালের ১৭ মে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পরেও তাঁকে বাড়িটিতে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। পরে একই বছরের ১০ জুন তিনি বাড়িতে প্রবেশ করার অনুমতি পান।

[৪] ১৯৯৪ সালের ১৪ আগস্ট এ বাড়িটিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে ঘোষণা করেন।

[৫] দেশি বিদেশি রাষ্ট্রীয় অতিথিরা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটি পরিদর্শন করেন, মহান এই নেতার সম্পর্কে তাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে যান পরিদর্শন বইয়ে। 

[৬] ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৫ সালের ৬ জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। তিনি লিখেছেন, বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতা, সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ একটি জাতিকে স্বাধীনতার জন্য অনুপ্রাণিত করেছিল এবং সোনার বাংলার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানের মত ঘটনা মানব সভ্যতার ইতিহাসে খুবই বিরল। মহান একজন মানবতাবাদী হিসেবে তিনি সকল মানুষের জন্য সমতা, সুযোগ ও মর্যাদার মহান প্রবক্তা। 

[৭] মন্তব্য বইয়ে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ বলেন, আমি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের মহান আত্মত্যাগ দেখে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত। তিনি তাঁর দেশের মানুষের সেবা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর দেখানো আদর্শ ও মূল্যবোধ বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের পরবর্তী প্রজন্মকে পথ দেখাবে।

[৮] ভারতের সাবেক এই রাষ্ট্রপতি ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন।

[৯] তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালী ইয়োলড্রিম ২০১৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। তিনি লিখেন, মৃত্যুর পর প্রায় ৪০ বছর পার হয়ে যাওয়ার পরও শেখ মুজিবুর রহমান ২০ শতকের একজন অন্যতম নেতা হিসেবে স্মরণীয় ও বরণীয়।

[১০] মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহীম মোহামেদ সলিহ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সারা জীবনের সংগ্রাম বাংলাদেশকে তাঁর চূড়ান্ত লক্ষ্য স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভের পথকে তৈরি করেছে। তিনি গণতন্ত্র ও আত্মনিয়ন্ত্রন অধিকার লাভের ক্ষেত্রে আইকন হিসেবে সর্বদা স্মরণীয় হয়ে থাকবেন এবং তাঁর আদর্শ বাংলাদেশ ও বিশ্বে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। 

[১১] তিনি ২০২১ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন।

[১২] ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙ্গালী জাতির অধিকার ও মর্যাদা আদায়ে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম গভীর তাৎপর্যপূর্ণ স্বাধীনতা সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন জনগণের নেতা এবং তাদের সেবায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাঁকে দেওয়া বঙ্গবন্ধু খেতাবে দেশের মানুষের প্রতি এই দেশপ্রেমিক নেতার গভীর ভালোবাসা প্রতিফলিত হয়।

[১৩] তিনি ২০১৩ সালের ৪ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন।

[১৪] জার্মানির প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান উলফ বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলেন, এই স্মৃতি জাদুঘর আমাদের একজন মহান রাষ্ট্রনায়ককে স্মরণ করিয়ে দেয়, যিনি তার জনগণের অধিকার ও মর্যাদার জন্য লড়াই করেছেন এবং অতিদ্রুত স্বাধীনতা ও জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন।

[১৫] ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর সম্মোহনী এবং অসীম সাহসী নেতৃত্বে মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর জনগণকে নেতৃত্ব দান করেছিলেন।

[১৬] ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী বলেন, স্বাধানীতার পরপরই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি। তাঁর আত্মত্যাগ সব সময় সম্মানিত হবে, পরবর্তী প্রজম্ম এ আত্মত্যাগকে সম্মান করবে এবং এ সম্মান অব্যাহত থাকবে। 

[১৭] ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই উপমহাদেশের প্রতিটি মুক্তিকামী, মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানুষের মনে বঙ্গবন্ধু এক জলন্ত অনুপ্রেরণা। বাংলা ভাষাকে বিশ্বের মঞ্চে অন্যতম শ্রেষ্ঠত্বে মর্যাদা এনে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। তিনি সেই বিরল নেতা, যার প্রতি ধর্মমত নির্বিশেষে সকল মানুষ প্রণাম জানিয়ে ধন্য হয়। [১৮] শান্তিতে নোবেল জয়ী কৈলাশ সত্যার্থি বঙ্গবন্ধু যাদুঘর পরিদর্শন করে বলেন, আমার আবেগ ও অনুভূতি জানানোর ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এই স্থানটি সত্যিকারভাবেই একটি তীর্থভূমি, প্রার্থনার একটি পবিত্র স্থান, যারা মানুষের মর্যাদা, স্বাধীনতা, ন্যায় বিচার ও কল্যাণে বিশ্বাস করে।

[১৯] ২০২৩ সালের ১৩ জানুয়ারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন শান্তিতে এই নোবেল বিজয়ী।

[২০] দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত জ্যাং স্যাং মিন ২০২৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। তিনি পরিদর্শন বইয়ে মন্তব্য করেন, বঙ্গবন্ধু শান্তির পায়রার মতো তাঁর দেশের মানুষের স্বাধীনতাকে ভালবাসতেন, যার মূল্য সার্বজনীন। তাঁর স্বাধীনতার সংগ্রাম ভবিষ্যতের জন্যও অব্যাহত থাকবে।

[২১] কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সিদ্ধার্থ রায় চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে প্রণাম। ভারতের মাটিতে থেকেও আমরা ‘জয় বাংলা’ ধ্বনিতে উদ্বেলিত হয়েছি। ৭ মার্চের আপনার কবিতা বাঙালী হিসেবে আমাকে, আমাদের আজও দোলা দেয়। তিনি ২০২৩ সালের ১০ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। সম্পাদনা: ইকবাল খান